ডেস্কনিউজঃ অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া আসামিদের তথ্য মিলিয়ে দেখার জন্য পরস্পরের মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল ইসলাম।
তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য দিচ্ছেন। প্রাপ্ত তথ্য একটির সঙ্গে আরেকটি মিলিয়ে দেখা হচ্ছে, তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করাও হচ্ছে। রিমান্ডে নেওয়া আসামিদের পৃথক পৃথকভাবে; আবার কখনো কখনো একে অপরের মুখোমুখি করেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের কোনো ঘাটতি যাতে না থাকে সেকারণেই এটা করা হচ্ছে।’
আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে খায়রুল ইসলাম এসব কথা বলেন। আজ সকালে এই মামলায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কারাগার থেকে বের করার পর আসামিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আসামিদের র্যাব-১৫-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে তদন্ত কর্মকর্তা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
ওই তিনজন হলেন কক্সবাজারে কর্মরত এপিবিএন-১৬-এর সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহজাহান, কনস্টেবল রাজিব ও আবদুল্লাহ। তাঁরা তিনজনই অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ নিহতের ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা রয়েছে, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। তাই তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যখন আদালতে হাজির করা হবে তখনও স্বাস্থ্য পরীক্ষার সার্টিফিকেটসহ হাজির করতে হবে।
এপিবিএনের তিন সদস্যকে গত ১৮ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে র্যাব। শুনানি শেষে সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ মঞ্জুর করেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালত। ওইদিনই তিন এপিবিএন সদস্যকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এদিকে কক্সবাজারস্থ র্যাব-১৫ কার্যালয়ে পঞ্চম দিনের মতো রিমান্ড চলছে সিনহা হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি বরখাস্তকৃত টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত।
গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহরিয়ার শারমিন ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে র্যাবকে।